Career Considerations: Identify the boss who is harmful to your career
ক্যারিয়ার ভাবনা: আপনার ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর বসকে চিনুন
ক্যারিয়ারের জন্য একজন পীড়াদায়ক বস শুধু আপনার কর্মক্ষেত্রকে বিষময় করেই তোলে না। বরং আপনার ব্যক্তিগত জীবনকেও প্রভাবিত করে। “টেম ইয়োর টেরিবল অফিস টেরেন্ট: হাউ টু ম্যানেজ চাইল্ডিস বস বিহ্যাভিয়র এবং থিরিভ ইন ইয়োর জব” বইয়ের লেখক লিন টেলরের প্রতিষ্ঠানের করা একটি জরিপে দেখা গেছে, কর্মীরা সপ্তাহে ১৯.২ ঘণ্টা ব্যয় করেন তাদের বস কী করেন কিংবা বললেন সেটা নিয়ে চিন্তা করে, যার মধ্যে ১৩ ঘণ্টা ব্যয় করেন কাজের সময় এবং ৬.২ ঘণ্টা ব্যয় করেন ব্যক্তিগত সময়ে।
লিন টেলর বলেন, একজন পীড়াদায়ক বস আপনার ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনকে বিষময় করে তুলবে। অপরপক্ষে একজন ভালো বস আপনার ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করবেন।
আপনার ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর এমন বস চেনার জন্য কিছু চিহ্নর কথা তুলে ধরা হয়েছে এমএসএন-এর এক প্রতিবেদনে। ক্যারিয়ারে সমৃদ্ধি আনতে ৭টি সহায়ক বই সংগ্রহে রাখেতে পারেন।
এক। বসের যদি প্রিয়পাত্র থাকে
প্রতিষ্ঠানে আপনার বসের যদি প্রিয়পাত্র থাকে, তাহলে প্রতিষ্ঠানের জন্য যত কাজই করেন তার কাছে মূল্যায়িত হবে না। তিনি এটাও বুঝতে পারবেন না যে, তিনি আপনার সঙ্গে অন্যায় করছেন। টেলর বলেন, আপনি কী কাজ করলেন অথবা কী অর্জন করলেন, সেটা কোনো ব্যাপারই হবে না এবং এটা ওইসব তোষামদকারী মানুষদের দ্বারা খর্ব হবে।
দুই। বস যদি অতিরিক্ত আশা দেখান
অতিরিক্ত আশা দেখানো বসরা অবিশ্বাসযোগ্য। আপনার বস যদি আপনার পদোন্নতি, দায়িত্ব বৃদ্ধি, বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস দেন এবং কাজের ক্ষেত্রে নীরব থাকেন, তবে আপনার উচিত ই-মেইলের মাধ্যমে তার সঙ্গে আলোচনা করা। যদি ই-মেইলে কোনো উত্তর না আসে, তবে এখানে আপনার উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কারণ রয়েছে।
তিন। বস যদি আড়ালে কথা বলেন
যখন আপনার বস কর্মীদের সম্পর্কে কানাঘুষা করেন, তবে তা খুবই বিশ্রী এবং অপেশাদারী একটি কাজ। দেখবেন আপনার সঙ্গে যেমন অন্যের বিষয়ে বলে, তেমনই আপনাকে নিয়েও অন্যের কাছে কানাঘুষা করেন।
চার। বস যদি প্রতিনিয়ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন
বস সকালে আপনাকে এক কথা বলবেন, দুপুরের খাবারের পর আবার আরেক গল্প দিবেন। এ ধরনের বসের সঙ্গে কাজ করা খুবই সমস্যাদায়ক। কারণ এটা আপনার টিমের উদ্যোগ ও কাজকে প্রভাবিত করে।
পাঁচ। ভুলের জন্য দোষারোপ কিন্তু সফলতায় কৃতজ্ঞতা জানান না
আপনার কোনো ভুল হলে বস যদি সঙ্গে সঙ্গেই আপনাকে সকলের সামনেই অপমান করেন, তবে আপনি বসকে পীড়াদায়ক মনে করতেই পারেন। কারণ ভালো বসরা জানেন যে, কর্মীর ভুলের বিষয়ে তার সঙ্গে একান্তভাবেই কথা বলা উচিত। এছাড়াও ভালো বসরা আপনার কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাবেন।
ছয়। আপনার কাজ কখনোই যথেষ্ট নয়
আপনার বস যদি আপনাকে প্রচুর কাজ দেন এবং আপনি প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৭ দিন কাজ করলেও তিনি সন্তুষ্ট না হন, তবে আপনাকে বুঝতে হবে আপনি কখনোই তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন না। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় কাজ তো দূরে থাক, আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও এর প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় আপনি যদি কথা না বলেন তবে তিনি আপনাকে পুশ করতেই থাকবেন।
সাত। আপনার বস কখনোই ভুল নন
আপনার বস যদি ভুল স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানায়, তবে বুঝতে হবে তিনি আপনার জন্য কখনোই তার জায়গা থেকে সরবেন না। লিন টেলরের এক জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯১ শতাংশ কর্মী বলেছেন, ম্যানেজার হিসেবে ভুল স্বীকার করা কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আট। বস যদি আপনাকে তার মতোই দেখতে চান
বেশিরভাগ মানুষই অন্যদেরকে তার মতো দেখতে পছন্দ করেন। কিন্তু ভালো বসরা জানেন, ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্বই টিমকে আরও উন্নত করতে পারে। যদি আপনার বস আপনার সকল কাজেই তার প্রতিচ্ছবি দেখতে চান, তবে আপনি তাদের একটি কিংবা দুটি পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং বাকিগুলোর জন্য তাকে ধন্যবাদ দিন। নিজের জায়গাতেই থাকুন এবং আপনার বসের পরামর্শকে যে আপনি মূল্যায়ন করেছেন তাকে সেরকমটা দেখান।
আপনার ‘বস’-এর সঙ্গে কীভাবে চলবেন, সেটাই বলার বিষয়। প্রথমেই মনে রাখতে হবে, জন্ম নিয়েই কেউ বস হয়ে যান না, প্রতিষ্ঠান তাদেরকে বস হিসেবে তৈরি করে নেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আজ যিনি আপনার বস, গতকাল তিনি ছিলেন অন্য কারো অধীনস্থ।
তিনি যে সব সময় অন্যদের থেকে আলাদা ধরনের হবেন- এমন কোনো কথা নেই। এটা ধরে নেবেন যে, সাধারণ মানুষের যা কিছু দোষ-ত্রুটি সবই তার আছে। মানবিক গুণও তার থাকবে। তাই আর পাঁচজনের সঙ্গে যেভাবে চলেন, বসের সঙ্গেও সেরকমই স্বাভাবিক ব্যবহার করবেন।
ইন্টারনেট অবলম্বনে