সম্পাদকীয়

Who Is Responsible For The Institutionalization Of Corruption?

দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকতা দায় কার? বাজার মুল্য নিয়ন্ত্রনে সিন্ডিকেট আছে কি নেই?

সয়াবিন তেলের দামে কারসাজি; বিশ্ববাজারে কমেছে ৫২ শতাংশ, দেশে ১৭ শতাংশ!

আন্তর্জাতিক বাজারে গত পৌনে দুই বছরে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ৫১ দশমিক ৫২ শতাংশ। জ্বালানি তেলের দাম কমায় জাহাজ ভাড়াসহ পরিবহণ খরচ কমেছে। এ হিসাবে সয়াবিনের দাম দেশের বাজারে অর্ধেকের বেশি কমার কথা। এর বিপরীতে ওই সময়ে ডলারের দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ। এ হিসাবে আরও প্রায় ২৮ শতাংশ বাড়ার কথা।

আন্তর্জাতিক বাজার, জাহাজ ভাড়া, পরিবহণ ব্যয় ও ডলারের দাম বৃদ্ধি সমন্বয়ের ফলে তেলের দাম কমার কথা ২২ থেকে ২৫ শতাংশ। সেখানে আলোচ্য সময়ে দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে মাত্র ১৭ শতাংশ। এদিকে রোজা উপলক্ষ্যে ভ্যাটে বড় ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর প্রভাবও বাজারে পড়েনি। তবে ‘অদৃশ্য’ খরচের কারণে তেলের দাম প্রত্যাশা অনুযায়ী কমছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে অর্ধেকের বেশি। এ হিসাবে আমদানি খরচ কমেছে অর্ধেক। জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে জাহাজ ভাড়া গড়ে কমেছে। একই সঙ্গে অন্যান্য খাতে তেল পরিবহণ খরচও কমেছে। কনটেইনার সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় এ খাতেও খরচ কমেছে। ফলে সয়াবিন আমদানির খরচও কমেছে ডলারের হিসাবে। কিন্তু তেলের বাজারে এর প্রভাব পড়েনি।

তবে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ায় এর আমদানি খরচ বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনের দাম ২০২২ সালের জুনে বেড়ে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৮৭ ডলারে উঠেছিল। এরপর তা কমতে থাকে। ২০২৩ সালের জুনে তা কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৮ ডলারে। একই বছরের ডিসেম্বরে কিছুটা বেড়ে দাম ১ হাজার ৬৮ ডলারে ওঠে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা আরও কমে ৯৭১ ডলার ও ফেব্রুয়ারির শেষদিকে তা আরও কমে ৯১১ ডলারে নামে। আলোচ্য সময়ে সয়াবিনের দাম কমেছে ৫১ দশমিক ৫২ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ ডলারের সয়াবিন তেলের দাম কমে এখন ৪৮ ডলার হয়েছে। একই সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে গত পৌনে দুই বছরের তুলনায় জাহাজ ভাড়া কিছুটা কমেছে।

এর সঙ্গে অন্যান্য খরচও কমেছে। ফলে সব মিলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সয়াবিন তেল দেশে আনার খরচ ডলারের হিসাবে অর্ধেকের বেশি কমেছে। তবে এটি আমদানি করতে হয় ডলারের মাধ্যমে। আলোচ্য সময়ে ডলারের দাম ৮৬ থেকে বেড়ে ১২৬ টাকা হয়েছে। এর দাম বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ।

এ হিসাবে আমদানি খরচ বেড়েছে। ফলে একদিকে আমদানি খরচ অর্ধেকের বেশি কমেছে। অন্যদিকে ডলারের কারণে দাম প্রায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এসব খরচ সমন্বয় করলে স্থানীয় বাজারে সয়াবিন তেলের দাম গড়ে ২২ থেকে ২৫ শতাংশ কমার কথা। কিন্তু কমেছে মাত্রা ১৭ শতাংশের কম। এর দাম সর্বোচ্চ প্রতি লিটার ২০৫ টাকায় উঠেছিল। এখন তা কমে ১৭০ টাকায় নেমেছে।

আন্তর্জাতিক বাজার ও ডলারের দাম সমন্বয় করলে প্রতি লিটারে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ কমলেও ৫১ টাকা কমার কথা। এ হিসাবে বর্তমানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১৫৪ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা লিটার। এর মধ্যে আসন্ন রোজা উপলক্ষ্যে সয়াবিন তেল আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।

উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিপণন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি লিটারে দাম কমার কথা আরও ৭ থেকে ৮ টাকা। এর প্রভাবও পড়েনি। সব মিলে দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৫০ টাকার কম হওয়ার কথা।

এ প্রসঙ্গে দেশের খ্যাতিমান একটি তেল পরিশোধন কোম্পানির একজন কর্মকর্তা জানান, শুধু ডলার ও আন্তর্জাতিক বাজার সমন্বয় করলেই হবে না। এর সঙ্গে কোম্পানি, বিপণনের প্রতিটি ধাপে মুনাফা ও অন্যান্য খরচও হিসাবে নিতে হবে। এর বাইরে ‘অদৃশ্য’ অনেক খরচও রয়েছে। যেগুলো বড় অঙ্কের। এসব খরচও তেলের বাজার দরের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়। যে কারণে শুধু খাতা-কলমের হিসাব দিয়ে তেলের দাম নির্ধারণ করলে কোম্পানি বাঁচবে না।

তিনি আরও বলেন, রোজায় তেলের চাহিদা বাড়ে। যে কারণে খুচরা ব্যবসায়ীরা তেল কিনে মজুত করেন। তারা তেলের দামও বাড়ায়। কোম্পানি থেকে তেলের দাম কমালেও বাজারে এর প্রভাব পড়তে ১৫ দিনের মতো লেগে যায়।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, রোজার প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্ধারিত সীমার মধ্যে সয়াবিনের দাম চলে আসবে। এদিকে গত ১ মার্চ থেকে সয়াবিন তেলের লিটারে দাম ১০ টাকা কমানোর কথা। কিন্তু এটি এখনো কার্যকর হয়নি। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, কম দামে এখন মিল থেকে তেলের সরবরাহ আসছে না। যে কারণে খুচরা বাজারে এর দাম কমছে না।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল সয়াবিনের বুকিং রেট গত ডিসেম্বরে ছিল প্রতি মেট্রিক টন ৯৮০ ডলার। তখন স্থানীয় বাজারে সয়াবিন বিক্রি হয়েছে প্রতিমণ ৫ হাজার ৮০০ টাকা দরে। তিন মাস পর এসে বর্তমানে প্রতি টনে ৫০ ডলার কমে ভোজ্যতেলের বুকিং রেট বা আমদানি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯৩০ ডলারে।

৯৩০ ডলারে বুকিং দেওয়া ভোজ্যতেল বাজারে এসেছে। খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক মীর গ্রুপের অন্যতম পরিচালক মীর মোহাম্মদ হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট কমার পর দেশীয় বাজারেও ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা কমেছে। বুধবার বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ে ভোজ্যতেল বিক্রি হয়েছে প্রতিমণ ৫ হাজার ৭০০ টাকা দরে। অর্থাৎ প্রতিমণে দেশের বাজারে কমেছে ১০০ টাকা। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে কমেছে ৫০ ডলার হিসাবে ৬ হাজার ৩০০ টাকা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, ভোজ্যতেলের দাম তেল পরিশোধন কোম্পানি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একসঙ্গে বসে ঠিক করে। সে অনুযায়ী কোম্পানি থেকে তেল কিনে নিই। সেগুলো আমরা খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। খুচরা বাজার তদারকি করার দায়িত্ব সরকারের।

তিনি আরও বলেন, তিন স্তরে তেলের মজুত বিবেচনায় নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়। মজুত কত আছে, কী পরিমাণ তেল পাইপলাইনে আছে, আবার কী পরিমাণ তেল বাজারে আছে। এগুলোর গড় মূল্যও বিবেচনায় নেওয়া হয়। আগে আমদানি করা তেল বা পরিশোধন করা তেল না থাকলে দাম আরও কমানো সম্ভব ছিল।

State Watch অবলম্বনে

cnews TODAY

The full form of cnewsTODAY is “Consumer News Today” is meant to be a supplement to the print edition, featuring consumer news, weekly briefs, sustainable campaign, videos, blogs, help to learn, photo galleries and additional content, opinions expressed are those of the writer and do not necessarily reflect the views of the consumers, members or volunteers of the organization “Society for Integrated Voluntary Affairs” registered under the law of “The Societies Registration Act, 1860 – in Bangladesh. It reflects the stories from every corner, NEWS from everywhere, network’s consumers, core mission of providing consumer news coverage and insights into the consumer safety, protection from business, and financial aspects of the world.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button