What Are The Rights Of A Consumer Under The Consumer Rights Act?
ভোক্তা অধিকার আইনে একজন ভোক্তার অধিকার কি?
ভোক্তা অধিকার আইনে ভোক্তার অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব বন্ধে আইনের পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা সৃষ্টি প্রয়োজন। কোন দেশের নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় কিছু সুযোগ সুবিধা ভোগ করা সাংবিধানিক অধিকার। তবে অন্যান্য সব অধিকার থেকে কিছুটা ব্যতিক্রম একজন ভোক্তার অধিকার।
আইনের সংজ্ঞায় ভোক্তা কে?
অর্থনীতির ভাষায় যিনি নিজের ভোগের জন্য পণ্য ক্রয় করেন তাকে ভোক্তা বলে। যখন একজন ভোক্তা কোন দ্রব্য বা পণ্য ক্রয় কনবেস সেসময় পণ্য সম্পর্কে তার বিস্তারিত জানার অধিকার আছে, তার ক্রয়কৃত পণ্যের উৎপাদনের সময়কাল, মেয়াদ উর্ত্তীনের সময় আর পণ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে সমস্ত তথ্য উপাত্ত জানা একজন নাগরিকের কর্তব্য ও অধিকার।
একজন ভোক্তার অধিকার কি?
বর্তমান সময়ে দেখা যায় পণ্যের ক্রয় বা সেবা গ্রহণের সময় বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হন অধিকাংশ ভোক্তা। তাই প্রতারণা থেকে ভোক্তাদের সুরক্ষা দিতে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ নামে আইন প্রণয়ন করেন।
এই আইনে একজন ভোক্তা কোন পণ্য ক্রয়ের সময় কি কি অধিকার ভোগ করতে পারবেন তা উল্লেখ আছে। তার মধ্যে যথাযথ ক্রয়কৃত পণ্যের ওজন ও পরিমাণ ঠিক আছে কিনা, কি কি কাঁচামালের সমন্বয়ে পণ্যের উৎপাদন হয়েছে আর মোড়কীকরণ ও পণ্যের সঠিক মূল্য সম্পর্কে জানার অধিকার গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু বর্তমান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন থাকলেও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োগ দেখা যায় না। ভোক্তাদের সচেতনতার অভাব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে দিন দিন প্রতারণার শিকার হচ্ছে অধিকাংশ ভোক্তারা।
ভোক্তা অধিকার আইনে কি বলা আছে?
সচেতনতার মাধ্যমে ভোক্তাদের এই আইন সম্পর্কে সচেতন করাটা জরুরী। আর আশে পাশে আমরা যারা এই আইন সম্পর্কে জানি তারা আমাদের পাশের মানুষকে জানানোর মাধ্যমে সঠিক পদ্ধতিতে অভিযোগ দায়ের দ্বারা প্রতিকারের ব্যবস্থা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব কমাতে পারি। শাস্তির মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব কমলে ভোক্তা বা সেবা গ্রহীতাদের প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এ মোট ৮২ টি ধারা ও কয়েকটি উপধারা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ধারার মধ্যে আছে কোন পণ্যের মোড়ক না থাকলে কিংবা পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য না থাকলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৩৭ ধারায় বিক্রেতাকে অনধিক ১ বছরের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করতে পারেন আদালত।
যদি কোন বিক্রেতা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে তাহলে বিক্রেতাকে অনধিক ১ বছর কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যেতে পারে উক্ত আইনের ৪০ ধারা অনুযায়ী।
তাছাড়া কোন বিক্রেতা যদি ভেজাল পণ্য বিক্রয়ের সাথে জড়িত থাকে তাহলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪১ ধারায় বিক্রেতাকে ৩ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা যেতে পারে বলে আইনে উল্লেখ আছে।
যদি কোন বিক্রেতা পণ্যের উৎপাদনের সময় নিষিদ্ধ উপকরণ মিশ্রণ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাহলেও সর্বেোচ্চ ৩ বছরের কারাদন্ড ও ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করতে পারেন আদালত।
ইচ্ছাকৃতভাবে অধিক মুনাফার লোভে বিক্রেতা মিথ্যা তথ্য বা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতাকে আগ্রহ সৃস্টির মাধ্যমে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করলে এই আইনের ৪৪ ধারায় অনধিক ১ বছর কারাদন্ড বা ২ লাখ টাকা অর্থদন্ড কিংবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান আছে।
ভোক্তা অধিকার আইন অনুসারে ভোক্তার অভিযোগ দায়ের পদ্ধতি?
আইন অনুসারে একজন ভোক্তা কোন পণ্য ক্রয় করে প্রতারিত হলে সহজে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে সরাসরি ই-মেইলের (nccc-dncrp.gov.bd) মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারেন। ই-মেইলে অভিযোগকারী নিজের নাম,পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ঘটনার বিবরণ এবং প্রমাণস্বরূপ পণ্য ক্রয়ের রসিদের ছবি সংযুক্ত করতে হবে। তবে অভিযোগটি পণ্য ক্রয়ের ৩০ দিনের মধ্যে দায়ের করতে হবে। আর তদন্তে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে অভিযোগকারী জরিমানার ২৫% শতাংশ টাকা ফেরত পাবেন।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭৬ (১) অনুযায়ী,
“যে কোন ব্যক্তি, যিনি, সাধারণভাবে একজন ভোক্তা বা ভোক্তা হইতে পারেন, এই অধ্যাদেশের অধীন ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য সম্পর্কে মহাপরিচালক বা এতদুদ্দেশ্যে মহাপরিচালকের নিকট ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন।”
যেখানে অভিযোগ দায়ের করা যাবে
- মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ১ কারওয়ান বাজার (টিসিবি ভবন-৮ম তলা), ঢাকা, ফোন: +৮৮০২ ৮১৮৯৪২৫
- জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্র, টিসিবি ভবন- ৯ম তলা, ১ কারওয়ান বাজার ঢাকা, ফোন: ০১৭৭৭ ৭৫৩৬৬৮, ই-মেইল: nccc@dncrp.gov.bd
- উপ পরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, টিসিবি ভবন, বন্দরটিলা, চট্টগ্রাম, ফোন: ০৩১-৭৪১২১২
- উপ পরিচালক, রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, শ্রীরামপুর, রাজশাহী, ফোন: +৮৮০৭ ২১৭৭২৭৭৪
- উপ পরিচালক, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, টিসিবি ভবন, শিববাড়ী মোড়, খুলনা, ফোন: ০৪১-৭২২৩১১
- উপ পরিচালক, বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মহিলা ক্লাব ভবন, বরিশাল, ফোন: +৮৮০৪ ৩১৬২০৪২
- উপ পরিচালক, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, সিলেট ফোন: ০৮২১-৮৪০৮৮৪
- উপ পরিচালক, রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিউ ইঞ্জিনিয়ার পাড়া, রংপুর, ফোন: ০৫২১-৫৫৬৯১
প্রত্যেক জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
ভোক্তা অধিকার আইন অনুসারে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন যেভাবে
দায়েরকৃত অভিযোগ অবশ্যই লিখিত হতে হবে। ফরম ডাউনলোড লিংক
ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েব সাইট, ইত্যাদি ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে; বা অন্য কোন উপায়ে।
অভিযোগের সাথে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে।
অভিযোগকারী তাঁর পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করবেন।