বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে কানাডা। তবে প্রথমবারের মতো অভিবাসী কমানোর ঘোষণা দিয়েছে কানাডা সরকার। শিগগির দেশটিতে থাকা অস্থায়ী বাসিন্দা হ্রাস এবং স্থায়ী অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার। খবর রয়টার্সের।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মার্ক মিলার।
সম্প্রতি কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। পাশাপাশি বেড়েছে বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যাও। যার ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অস্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা। অস্থায়ী বাসিন্দাদের বড় অংশই এককালীন ভিসায় দেশটিতে যান।
বিগত কয়েক বছরে শ্রমিক ঘাটতি পুষিয়ে অর্থনীতিতে গতি আনতে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকার বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীলতার ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
মিলার জানান, বর্তমানে কানাডায় অস্থায়ী বাসিন্দা রয়েছেন ২৫ লাখ। গত ২০২৩ সালে এদের মধ্যে থেকে শতকরা ৬ দশমিক ৫ শতাংশকে কমানো হয়েছে, আগামী ৩ বছরও এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং প্রতি বছর ৫ শতাংশ করে হ্রাস করা হবে অস্থায়ী বাসিন্দাদের সংখ্যা।
স্থায়ী অভিবাসনের জন্য আবেদনের অনুমোদনেও নিয়ন্ত্রণ আসবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মার্ক মিলার। তবে এই নিয়ন্ত্রণের হার কেমন হবে— সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত থাকবে এই নিয়ন্ত্রণ।
পড়ুন: নিউইয়র্কে নতুন নিয়ম জারির পর কেমন আছেন অভিবাসন প্রত্যাশীরা
মার্ক মিলার আরও বলেন, ”আমরা দেশে অভিবাসীদের আগমন সহনীয় মাত্রায় রাখতে চাই এবং আবাসন ও অন্যান্য পরিষেবা ইস্যুতে নাগরিকদের যে ভোগান্তি শুরু হয়েছে— তার নিরসন চাই। এ কারণেই এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী মে মাস থেকে এটির বাস্তবায়ন শুরু হবে।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং স্নাতক শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যেসব শিক্ষার্থী কানাডায় অবস্থান করছেন, তাদের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিল কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার।
এছাড়াও কানাডায় আসতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জীবনব্যয় (কস্ট অব লিভিং) খরচ হিসেবে ব্যাংকে ১০ হাজার ডলার আছে এমন প্রমাণ দেখাতে হতো। ২০০০ সাল থেকেই এই অর্থের পরিমাণ একই রয়েছে। কিন্তু এখন জীবনব্যয়ের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এটি ২০ হাজার ৬৩৫ ডলার করা হয়েছে। এর মধ্যে জীবনব্যয় খরচের সঙ্গে ভ্রমণ ও টিউশন ফিস অর্ন্তভুক্ত থাকবে। এই খরচটি প্রতি বছর সমন্বয় করা হবে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার যে অস্থায়ী অনুমতি রয়েছে সেটির মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মিলার।