What Is The Crime Of The Consumer Not Buying The Product?
দরদাম ঠিক করে পন্য না কেনা কি ক্রেতা বা ভোক্তার অপরাধ?
জমে উঠেছে আসন্ন ঈদের বাজার। রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরের শপিংমল গুলোতে এখন ক্রেতা সমাগম এখন চোখে পড়ার মতো। বিক্রেতারাও এখন ক্রেতা চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের গুণাগুন তুলে ধরতে মহাব্যস্ত। প্রশ্ন হচ্ছে ঈদের বাজারে দরদাম ঠিক করে পন্য না কেনা কি ক্রেতা বা ভোক্তার অপরাধ?
সম্প্রতি দেশ টিভির একটি রিপোর্ট সোস্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচিত হচ্ছে। রিপোর্টে দেখা যায়, জনৈক বিক্রেতা ক্রেতা সম্পর্কে অশালিন ও আপত্তিকর মন্তব্য করছেন! যা একজন বিক্রেতার কাছ থেকে কোন ভাবেই কাম্য নয়।
কোন পন্য ক্রয় করাতে ভোক্তা বা ক্রেতার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। একজন ভোক্তা কোন পন্য ক্রয় করে প্যাকেটে ভরে বাসায় গিয়েও যদি মনস্থির করেন যে, ক্রয়কৃত পন্যটি তাঁর (ক্রেতার) পছন্দ হয়নি এবং তিনি তা ফেরত দিতে পারেন। যদিও এখানে ক্রেতার ইচ্ছাকে মুল্যায়ন তো করাই হয়নি বরং ক্রেতা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন বিক্রেতা।
ভিডিওটি ২.৮ মিলিয়ন ভিউ হয়েছে এবং ৫ সহস্রাধিক মন্তব্য করেছেন এবং অভিব্যক্তি দেখিয়েছেন ৪৭ হাজার।
একজন বিক্রেতার আচরন কেমন হওয়া উচিত?
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান অধ্যাপক শাহীনুর রহমান কালের কন্ঠে একজন বিক্রেতার আচরন সম্পর্কে লিখেছেন,
পন্য বিক্রিতে সৎ থাকুন:
যে কোন ধরনের অসততা থেকে দূরে থাকুন। যেমন: যে পন্যের যেটুকু গুণ ঠিক ততটুকুই বলুন। ক্রটিপূর্ণ পণ্য বিক্রি করা থেকে বিরত থাকুন।
ক্রেতাকে গুরুত্ব দিন:
বিক্রি করতে হলে পণ্যের ত্রুটি ক্রেতাকে প্রথমেই জানান। ক্রেতা ছোট-বড় যেই হোক না কেন তাকে গুরুত্ব দিন। প্রত্যেক কেত্রার উপস্থিতিকে স্বাগত জানান। অন্য ক্রেতার সঙ্গে ব্যস্ত থাকলেও মুখভঙ্গি, আই কন্টাক্ট বা ইশারা-ইঙ্গিতে ক্রেতাকে বুঝতে দিন যে আপনি তাকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
ক্রেতার আগ্রহ প্রকাশে সহযোগিতা করুন:
ক্রেতার প্রতি সত্যিকারের আগ্রহ প্রকাশ করুন। ক্রেতার প্রয়োজন মনোযোগ দিয়ে শুনুন। কথা বলার সময় ক্রেতার প্রতি পূর্ণ মনোনিবেশ করুন। এ ক্ষেত্রে শুনুন বেশি, বলুন কম।
ক্রেতার প্রতি পূর্ণ মনোনিবেশ করুন:
ক্রেতার মনোনিবেশ ব্যাহত করে এমন কাজ থেকে এ সময় একজন বিক্রেতা বিরত থাকবেন। যেমন- মোবাইল ফোন নাড়াচাড়া বা গান শোনা কোন ভাবেই করা যাবে না।
ক্রেতার প্রতি ভালো ব্যবহার:
সব শ্রেনীর ক্রেতার সঙ্গে পেশাদারি, ইতিবাচক এবং ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করুন। আপনার সঙ্গে রূঢ় আচরন করা সত্ত্বেও ক্রেতার সঙ্গে অশোভন আচরন করা থেকে বিরত থাকুন। অযথা দ্বন্ধ বা বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। পণ্য বিক্রি করতে না পারলেও ব্যবহার দিয়ে ক্রেতাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করুন।
সম্ভাব্য ক্রেতার উপস্থিতি ও গল্পগুজব:
সম্ভাব্য ক্রেতার উপস্থিতিতে অন্যের সঙ্গে গল্প বা ফোনালাপে ক্রেতার মনে বিরক্তির জন্ম দিতে পারে। কাজেই এ বিষয়ে বিক্রেতাকে খেয়াল রাখতেই হবে।
পণ্যমুল্য বা দর কষাকষি:
বড় শপিং মলগুলোতে বা ব্রান্ডের পণ্যে দর নিদ্দিষ্ট থাকে। সতরাং সেখানে পণ্য মূল্য নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার দর কষাকষি বা দর দামের প্রয়োজন পড়ে না। কিন্ত যেখানে পণ্যের মূল্য নির্ধারিত থাকে না সেখানে দর কষাকষির সুযোগ থাকে। এ ক্ষেত্রেও বিক্রেতাকে সৎ থাকা প্রয়োজন। একজন ক্রেতা খুব কম দাম বলার পরও তার প্রতি বিরক্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
বিক্রেতার পোষাক-পরিচ্ছেদ:
বিক্রেতাদের পোশাক পরিচ্ছেদ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি হওয়া জরুরী। দোকানের নিদ্দিষ্ট ড্রেস কোড থাকলে তা অনুসরণ করা প্রয়োজন। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বিক্রিত পণ্যের সঙ্গে মানানসই পোশাক পরিধান করুন। অর্থাৎ পোশাকে পেশাদারিত্বের ছাপ থাকা বাঞ্চনীয়।
ক্রেতার অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকুন:
ভোক্তা অধিকার আইনে একজন ভোক্তার অধিকার কি কি? বিক্রেতাকে অবশ্যই ক্রেতার অধিকারের প্রতি মর্যাদাশীল হতে হবে। ভোক্তা অধিকার আইনে ক্রেতার অধিকারকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেমন:- পণ্য সম্পর্কে তথ্য জানার অধিকার, পছন্দ করার অধিকার, পণ্য বা সেবার মান সম্পর্কে অভিযোগ করার অধিকার ইত্যাদি।