সম্পাদকীয়

Looking back: Today the Bloody Logi-Vaitha Massacre

ফিরে দেখা: রক্তঝরা লগি-বৈঠা তাণ্ডবের ১৮ বছর আজ

রাষ্ট্রিয় ক্ষমতার দখলে রাজনৈতিক সহিংসতার রক্তঝরা ২৮ অক্টোবর আজ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে রক্ষঝরা লগি-বৈঠার তাণ্ডবের ১৮ বছর আজ। ২০০৬ সালের এই দিনে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে লগি বৈঠা দিয়ে সাপ মারার মতো পিটিয়ে জামায়াত-শিবিরের ৬ নেতাকর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

শুধু তাই নয়, মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশের ওপর নৃত্য করে তারা- যা সভ্য দুনিয়ায় অকল্পনীয়। স্বাভাবিক কারণেই তখন ওই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছিল দেশে-বিদেশে।

লগি-বৈঠার নির্মম প্রহার, গুলি আর ইটপাটকেলের আঘাতে রাজধানীর পল্টন এলাকাতেই নিহত হন ৬ জন।

রাজধানীতেই জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৬ জন এবং ছাত্রমৈত্রীর এক কর্মী প্রাণ হারান।

ফিরে দেখা: লগি-বৈঠা তাণ্ডবের ১৮ বছর

২০০৬ সালের অক্টোবর মাস। বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকার তখন বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্ব নিতে না পারেন সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট তখন তুমুল আন্দোলন করছে।

এমন প্রেক্ষাপটে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টন-বায়তুল মোকাররম এলাকায় জামায়াতে ইসলামী এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সেদিন ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে অস্ত্র তুলে গুলি এবং মানুষ পিটিয়ে মারার ঘটনা গভীর আলোড়ন তৈরি করেছিল। রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় প্রকাশ্যে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে জামায়াত-শিবিরের ৬ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের নিহত নেতাকর্মীরা হলেন- মোজাহিদুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন (১), জসিম উদ্দিন (২), গোলাম কিবরিয়া শিপন, ফয়সাল এবং হাবিবুর রহমান। প্রকাশ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষের সামনে তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে দুর্বৃত্তরা লাশের ওপরে উঠে উন্মত্য নৃত্য করে। আহত জামায়াতের আরেকজন সাইফুল্লাহ মো: মাসুম ঘটনার দুই দিন পর হাসপাতালে মারা যান। একই সময় পল্টন মোড়ে নিহত হন ছাত্রমৈত্রীর খিলগাঁও থানা সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান। ওই সহিংস ঘটনায় পল্টন ও আশপাশের এলাকাতেই আহত হন কমপক্ষে এক হাজার মানুষ।

লগি-বৈঠা তাণ্ডবে মামলা এবং নিহতের বিচার!

এই ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে পল্টন থানায় মামলা করেন পল্টন থানা জামায়াতের তৎকালীন আমির এ টি এম সিরাজুল হক। মামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল, তোফায়েল আহমেদ, মো: নাসিম, আব্দুর রাজ্জাক, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে সহস্রাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। আহত মাসুম মারা যাওয়ার পরে ৩ নভেম্বর আরেকটি সম্পূরক এজাহার দাখিল করা হয়। এতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ ২৩ জনের নামোল্লেখ করে দুই শতাধিক লোককে আসামি করা হয়। অভিযোগটি দাখিল করেন নিহত মাসুমের ভাই মো: শামসুল আলম মাহবুব।

অপর দিকে ছাত্র মৈত্রীর রাসেল খান নিহতের ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ ১০ জনকে আসামি করে পল্টন থানায় একটি মামলা হয়। মামলার বাদি ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান। এ ঘটনায় পল্টন থানায় আরো তিনটি এবং শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়।

পল্টন থানায় করা ৬১ নম্বর মামলায় ২০০৭ সালের ১০ এপ্রিল ৪৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয় তারা হলেন আব্দুল জলিল, নাসিম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, সাহারা খাতুন, হাজী সেলিম, ডা: এইচবিএম ইকবাল, আব্দুস সালাম ওরফে সেলিম, সবুজ, আলী, মনা, রতন, আবুল, বাবু ওরফে নাজির আহম্মদ, জাকির ওরফে জাকির হোসেন, শফিকুল ইসলাম, সালাউদ্দিন খোকন, সুলতান মিয়া, আবুল কাশেম, আলমগীর ওরফে গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর, নওসের আলী, আব্দুল লতিফ ওরফে ক্ষ্যাপা, মো: জাকির হোসেন, শাহরিয়ার ওরফে সোহেল শাহরিয়ার, শাহাবুদ্দিন কিরন, জাহাঙ্গীর হায়দার চৌধুরী, আশরাফ হোসেন, টিটু, ওমর ফারুক, শেখ হাসিনা, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সিদ্দিক নাজমুল আলম, রাসেল, মজিবুর রহমান মাইজ্জা, বেলায়েত হোসেন, আবু সাঈদ, বশির আহম্মদ, কিরণ ওরফে আব্দুল মালেক, সোহেল শাহরিয়ার ওরফে শর্টগান সোহেল, জাহাঙ্গীর আলম, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী, মোস্তাকিম বিল্লাহ, মুকুল, রায় মোহন শীল এবং সুমন।

চার্জশিটটি ২০০৭ সালের ২৪ এপ্রিল গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে পরোয়ানা মুলতবি করা হয়। ১৪ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পরে ২০০৯ সালের ১২ আগস্ট মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়।

অপর দিকে কামরুল আহসানের করা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। ২০০৯ সালের ৫ মে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়নি। এরপর উচ্চ আদালতে কোয়াশমেন্টের আবেদন করা হলে উক্ত মামলাটি স্থগিত করা হয়।

উইকিপিডিয়ায় স্থান পাওয়া সে দিনের লগি বৈঠা তান্ডবের কথা স্মরণ হলে আজো আঁতকে ওঠে মানুষ।

cnews TODAY

The full form of cnewsTODAY is “Consumer News Today” is meant to be a supplement to the print edition, featuring consumer news, weekly briefs, sustainable campaign, videos, blogs, help to learn, photo galleries and additional content, opinions expressed are those of the writer and do not necessarily reflect the views of the consumers, members or volunteers of the organization “Society for Integrated Voluntary Affairs” registered under the law of “The Societies Registration Act, 1860 – in Bangladesh. It reflects the stories from every corner, NEWS from everywhere, network’s consumers, core mission of providing consumer news coverage and insights into the consumer safety, protection from business, and financial aspects of the world.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button