Cab Demands To Increase Power Supply From National Grid To Chittagong-Cox’s Bazar
জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর দাবি ক্যাবের
চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের পল্লী বিদ্যুতায়ন উন্নয়ন বোর্ডের এলাকায় চরম লোডশেডিংয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতারা। তাই জরুরিভাবে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো ও স্থানীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ স্থানীয় এলাকায় সরবরাহের দাবি জানিয়েছে ক্যাব (CAB)।
শনিবার (৬ এপ্রিল) গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ বিবৃতি দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে সই করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এলাকাগুলোতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের মানুষের জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত। দিন-রাত মিলিয়ে কোথাও কোথাও ছয় থেকে আট ঘণ্টা, কোথাও ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। আবার চট্টগ্রামে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম অঞ্চলকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে। যা প্রকারান্তরে এই এলাকার মানুষের প্রতি চরম বৈষম্যের শামিল। বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরকারের বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-বিপিডিবির কাছ থেকে কিনে গ্রাম এলাকার গ্রাহকদের সরবরাহ দেয় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। ফলে সেখানে বৈষম্য করে পিডিবি। পিডিবি নিজেদের জন্য বেশি রেখে বাকিটা পল্লী বিদ্যুৎকে দেয়। ফলে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা যারা গ্রামে থাকেন সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার ও ভোগান্তিতে পড়েন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্যাব নেতারা আরও বলেন, এই অঞ্চলে চাহিদার বেশি উৎপাদন, তবু চট্টগ্রামে বৈষম্যমূলকভাবে লোডশেডিং করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গড়ে ১ হাজার ৬৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আর চট্টগ্রামের চাহিদা মাত্র ১১৮০-১২০০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের বাঁশখালীতে অবস্থিত এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন ৩৮৫ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। শিকলবাহায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২০৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। মহেশখালী মাতারবাডীর ১২০০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬৩০ থেকে সাড়ে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। অপরদিকে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
এ ছাড়াও কক্সবাজারের খুরুস্কুল বায়ো বিদ্যুৎ থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ওইসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে এলাকার মানুষকে ভিটেবাড়ি ছাড়তে হয়েছে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদন শুরু করলে এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ মিলবে, কৃষি, শিল্প ও বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ সংকট হবে না। কৃষি ও শিল্পে সম্প্রসারণ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পুরো উল্টো। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কক্সবাজার-চট্টগ্রাম অঞ্চলে না দিয়ে তা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও চট্টগ্রামে লোডশেডিংয়ে রেখে সব বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় জরুরিভাবে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো ও স্থানীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে সরবরাহের দাবি জানাচ্ছি।